স্বামী স্ত্রী বা অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তানদের আয় কোথায় দেখাবেন? | Professionals TaxVAT
করদাতার স্বামী/স্ত্রী বা অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তানদের নামে যদি পৃথকভাবে টিআইএন না থাকে তাহলে তাদের আয়ও করদাতার আয়ের সঙ্গে একত্রে দেখাতে হবে।
দেখা গেল, স্বামী চাকরি করেন এবং বেতন থেকে যে করযোগ্য আয় হয়েছে তা করমুক্তসীমা অতিক্রম করেছে। তাই তাকে বাধ্যতামূলকভাবে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হয়। কিন্তু তার স্ত্রী একজন গৃহিণী এবং তার আয় করমুক্ত সীমা অতিক্রম করেনি। তাই তার টিআইএন নেই ৷
এখন যদি দেখা যায়, আপনার গৃহিণী প্রতিমাসে অল্প অল্প করে সঞ্চয় করে ব্যাংকে এফডিআর করেছেন এবং তা থেকে তিনি সুদ পেয়েছেন। সেক্ষেত্রে ওই সুদও আপনি যখন করযোগ্য আয় হিসেব করে রিটার্ন তৈরি করবেন তখন আপনার করযোগ্য আয়ের সঙ্গে যোগ করে দেখাতে হবে।
আপনি যখন আয়কর রিটার্ন তৈরি করেন তখন পরিসম্পদ, দায় ও ব্যয় বিবরণী যদি বাধ্যতামূলক হয় তাহলে রিটার্নের সঙ্গে দাখিল করতে হবে । এই বিবরণী তৈরি করার সময় স্ত্রীর যে স্বর্ণ আছে তা কিন্তু উল্লেখ করে দিতে হয় । ঠিক তেমনি, স্ত্রীর যদি আয় থাকে তাহলে তাও স্বামীর করযোগ্য আয়ের সঙ্গে যোগ করে দেখাতে হবে।
আবার অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তানের নামে যদি কোনো আয় হয় তাহলে ওই আয়ও বাবা/মা, যার টিআইএন আছে, তার সঙ্গে দেখাতে হবে। বাবা এবং মা উভয়েই যদি করদাতা হন তাহলে যে কোনো একজনের সঙ্গে যোগ করে দিলেই হবে।
স্ত্রী যদি করদাতা হন এবং স্বামীর আয় যদি করযোগ্য না হয়, সেক্ষেত্রেও স্বামীর আয় স্ত্রীর করযোগ্য আয়ের সঙ্গে যোগ করে দেখাতে হবে।
গৃহিণীর যদি সঞ্চয়পত্র থাকে এবং সেখান থেকে যে ইন্টারেস্ট পেয়েছেন তা থেকে উৎসে কর কর্তন করে রাখা হয়। যদি তার আয় করমুক্ত সীমা অতিক্রম না করে তাহলে এতদিন পর্যন্ত রিটার্ন দাখিল করা বাধ্যতামূলক ছিল না। সঞ্চয়পত্র ক্রয়ের ক্ষেত্রে টিআইএন লাগে। জেনে রাখুন, সঞ্চয়পত্রে যদি ৫,০০,০০০ টাকার অধিক বিনিয়োগ থাকে তাহলে বাধ্যতামূলকভাবে রিটার্ন দাখিল করতে হবে। সেক্ষেত্রে স্বামীর আয়ের সঙ্গে আর দেখাতে হবে না।
আরেকটি কাজ করতে হবে, এতদিন স্ত্রী রিটার্ন দাখিল না করাতে স্বামীর রিটার্নে তার যে সম্পদ, যেমন – স্বর্ণ বা অন্যান্য যদি আরো কিছু থাকে, দেখিয়েছিলেন সেগুলো আর স্বামীর রিটার্নে দেখাতে হবে না। স্ত্রী তার নিজের রিটার্নে দেখাবেন। যেহেতু এখন থেকে স্ত্রী তার আয় রিটার্নে দেখাচ্ছেন তাই তার যাবতীয় আয়, ব্যয় এবং সম্পদের তথ্যও তার রিটার্নেই দেখাবেন।
তবে এক্ষেত্রে যেহেতু আপনার স্ত্রীর টিআইএন আছে তাই আপনি ৫,০০,০০০ টাকা সঞ্চয় পত্রে বিনিয়োগ না থাকলেও এক পাতার রিটার্ন দাখিল করে দিতে পারেন।
এতে করে করদাতা ব্যক্তির করের পরিমাণ কমবে। ধরুন, স্বামী করদাতা। এতদিন স্ত্রীর যেহেতু আয় করমুক্ত সীমার নিচে ছিল, তাই স্ত্রীর আয় স্বামীর আয়ের সঙ্গে দেখিয়ে দিতেন। এতে করে স্বামীর করের পরিমাণ বেড়ে যেত।
এখন যেহেতু স্বামী এবং স্ত্রী দুজনেরই টিআইএন আছে, তাই দুজনই রিটার্ন দাখিল করবেন। স্ত্রীর আয় যেহেতু করমুক্ত সীমার নিচে তাই তাকে কোনো কর দিতে হবে না। শুধু রিটার্ন দাখিল করলেই হবে।
অন্যদিকে স্বামী যখন রিটার্ন দাখিল করবেন তখন তিনি শুধু তার আয়ই রিটার্নে দেখাবেন। স্ত্রীর আয় যেহেতু এবার দেখাচ্ছেন না তাই তার আয় গতবারের মতো বাড়বে না, ফলে করের পরিমাণ কমে যাবে।
Bangladesh Professionals VAT & Tax Law Firm